২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনামঃ
আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। আজ ৬ই ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ পাক-হানাদার মুক্ত দিবস,৪৮জন শহীদের গণকবরে জেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলী প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা ব্যাটালিয়ন ৫৩ বিজিবির অভিযানে মোটরসাইকেল ও মোবাইলসহ আটক ২ সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এড. নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বঞ্চিত দেওয়ান জয়নুল জাকেরীনের বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জে নজেকশিস এর নবনির্বাচিত সভাপতি তরিকুল ইসলাম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধের অন্তঃসত্ত্বা সোনালীকে বিএসএফের নিকট হস্তান্তর করল বিজিবি কোটচাঁদপুরে শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি হরিণাকুণ্ডুতে ভোর হলো ঝিনাইদহের আয়োজনে সালেহা বেগম মহিলা ডিগ্রী কলেজে নবান্ন উৎসব ২০২৫ উদযাপিত। বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশ্বম্ভরপুরের ভাদেরটেক বাজারে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজয় মাসে যুবক ও তরুন প্রজন্মকে নিয়ে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা

ওসি খালিদ: আগুনের ভেতর মানবতার আলোকদূত

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৫, ২০২৫,

মো. শাহজাহান বাশার

আগুনের লেলিহান শিখা যখন মালামালগুলো গ্রাস করে নিচ্ছিল, তখন মানুষজন শুধু দাঁড়িয়ে তাকিয়ে দেখছিলযেন অসহায়ত্বের এক নীরব প্রদর্শনী চলছে সামনে। কেউ এগিয়ে আসছে না, কেউ ঝুঁকি নিতে চায় না। ঠিক তখনই সামনে এলেন একজন মানুষ—যিনি শুধু একজন পুলিশ অফিসার নন, দায়িত্ববোধ, মানবতা আর নেতৃত্বের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি ওসি খালিদ।

তখন তিনি সবাইকে প্রশ্ন করলেন, “তোমরা এই মালামালগুলো সরাচ্ছ না কেন?”উত্তরে সাধারণ মানুষরা বলল, “স্যার, ওগুলো অনেক ভাড়ি।”

একজন নেতা তখনই নেতা—যখন তিনি শুধু নির্দেশ দেন না, বরং নিজেই হাতে-কলমে শুরু করে দেখিয়ে দেন। ওসি খালিদ তাই-ই করলেন। তিনি বললেন,“তোমরা চার-পাঁচ জন মিলে মালগুলো আমার মাথায় তুলে দাও।”

মানুষদের মুখে তখন বিস্ময়। পুলিশ অফিসার—যার দায়িত্ব নিরাপত্তা দেওয়া, যিনি ভিড় নিয়ন্ত্রণ করবেন, তিনি নিজেই আগুনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মাল মাথায় তুলছেন! চারপাঁচজন মিলে মালামালটি তাঁর মাথায় তুলে দেয়। তিনি সেটি নিয়ে এগিয়ে যান নিরাপদ জায়গায়। এই দৃশ্য ছিল শুধু একটি মুহূর্ত নয়—এটি ছিল মানবতার এক শক্তিশালী বার্তা।

এরপর যা ঘটল, তা সাধারণ কোনো দৃশ্য নয়।যে জনগণ মুহূর্ত আগেও দাঁড়িয়ে ছিল অসহায় হয়ে, ওসি খালিদের এই অনন্য সাহসিকতা দেখে তারা সকলে নড়ে উঠল। একজন বৃদ্ধ এগিয়ে এলেন, তারপর একজন শিশু, এমনকি মহিলারাও কাজ শুরু করলেন।
মানুষের মনে যেন নতুন শক্তি জন্ম নিল। আগুনের ভয় ভুলে সবাই নামলেন রক্ষার কাজে।

এ যেন এক অকল্পনীয় চিত্র—একজন অফিসারের আচরণ কীভাবে পুরো সমাজকে এক মুহূর্তে বদলে দিতে পারে, তার জীবন্ত উদাহরণ।

ওসি খালিদ ভাই যখন আমাকে এই কথাগুলো বলছিলেন, তখন আমি শুধু নিঃশব্দে শুনছিলাম। আমার বুক ভরে উঠছিল শ্রদ্ধায়, গর্বে। ভাবছিলাম—আজকের পৃথিবীতে কি এমন মানুষ এখনও আছে?
হ্যাঁ, আছে।
এবং তারা আমাদের বাংলাদেশ পুলিশেই আছে।

বাংলাদেশ পুলিশের একটি বড় শক্তি—তাদের মানবিকতা।
এই মানবিকতাই খালিদ ভাইয়ের মতো কর্মকর্তাদের আলাদা করে তোলে। আগুনের ঝুঁকি, ধোঁয়া, ভারী মালামাল—কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, দায়িত্ব শুধু ইউনিফর্মে নয়—দায়িত্ব মানুষের অন্তরে।

আজকের সমাজে এমন দৃশ্য দুর্লভ হয়ে উঠছে। অনেক সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দূরত্বে থাকেন, সাধারণ মানুষকে শুধু নির্দেশ দেন। কিন্তু একজন প্রকৃত নেতা নির্দেশ দিয়ে নয়—নিজে কাজ শুরু করে অন্যকে উৎসাহিত করেন। তাই তো ওসি খালিদ শুধু একজন অফিসার নন—তিনি একজন মানবিক নেতা, একজন অনুপ্রেরণার প্রতীক।

আমাদের দেশে এমন মানুষ এখনো আছে—এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় আশার কথা।
তাই বলতেই হয়—

স্যালুট খালিদ ভাই। আপনি আমাদের অহংকার।
আপনি বাংলাদেশ পুলিশের গর্ব।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর দেখুন