1. admin@theonlinenewsbangladesh.com : admin :
বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:২০ অপরাহ্ন
সাইট উন্নয়নের কাজ চলছে

মণিরামপুরে ধান সংগ্রহ শুন্য, পঁচা চাল কিনে কোটি টাকা হা তিয়ে বদলি হন গুদাম ইনচার্জ

নূরুল হক, মনিরামপুর প্রতিনিধি
  • Update Time : সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ১৭৮ Time View

চলতি মৌসুমে আমন ধান ও চাল সংগ্রহের দুইমাস অতিবাহিত হলেও অদ্যাবধি পর্যন্ত যশোরের মণিরামপুরে এক ছটাক ধান সংগ্রহ হয়নি। তবে এ পর্যন্ত মিলারের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ দেখানো হয়েছে ৫৪৪ মে:টন। অভিযোগ রয়েছে এর মধ্যে স্বল্পমূল্যে ৫৩১ মে:টন পঁচা চাল (খাবার অনুপযোগী) সংগ্রহ করে রাষ্ট্রের প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। আর এ অপকর্মটি করেছেন খাদ্যগুদাম ইনচার্জ মেহেদী হাসান।

 

বিষয়টি জানাজানি হবার পর অতি গোপনে মেহেদী হাসান গোপালগঞ্জে বদলি হয়ে পার পেয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে কৃষক, মিলার ও এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ।

 

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস সূত্রে জানাযায়, আমন মৌসুমে সরকার মণিরামপুরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেন এক হাজার ৫৫৯ মে:টন এবং চাল এক হাজার এক’শ মে:টন। প্রতি কেজি ধানের মূল্য নির্ধারন করা হয় ৩৩ টাকা এবং চাল ৪৭ টাকা। গত বছর ১৭ নভেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবার কথা আগামি ২৮ ফেব্রæয়ারি। কিন্তু অধ্যাবধি এক ছটাক ধানও সংগ্রহ করা হয়নি।

 

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিত সাহা জানান, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজার দর বেশি হওয়ায় কৃষকরা ধান দেননি। গালদা গ্রামের আমন চাষী সোহান, আশরাফুজ্জামান জানান, বাজার মূল্য বেশি হওয়া তার ওপর গোডাউন কর্তৃপক্ষের নানাবিধ হয়রানির কারনে এবার তারা ধান সরবরাহ করেনি। একই কথা জানান, রাজগঞ্জ, নেহালপুর, চিনাটোলাসহ বিভিন্ন এলাকার অনেক চাষি।

 

অন্যদিকে ৪৭ টাকা কেজি দরে এক হাজার ২৬ মে:টন চাল সরবরাহের জন্য ১৪ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হন। ইতিমধ্যে মোট ৫৮১ মে:টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ রয়েছে উপজেলা খাদ্য গুদাম ইনচার্জ(ওসিএলএসডি) মেহেদী হাসান গত ডিসেম্বর মাসে স্থানীয় কয়েকজন মিলার এবং কুষ্টিয়া থেকে ৫৩১ মে:টন পঁচাচাল কমমূল্যে কিনে ভাল বস্তায় ভরে সরকারের নির্ধারিত মূল্য দেখিয়ে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

 

বিষয়টি জানাজানি হলে খাদ্য বিভাগে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

 

এ ব্যাপারে জেলা খাদ্য অধিদপ্তর থেকে একটি টিম তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পান বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে।
এ দিকে ওসিএলএসডি মেহেদী হাসান নিজেকে রক্ষা করতে আত্মগোপনে থেকে বিশেষ তদবিরে গোপালগঞ্জ বদলি হন। মেহেদীর স্থলে চৌগাছা থেকে বদলি হয়ে ৩১ ডিসেম্বর মনিরামপুরে যোগদান করেন মতিয়ার রহমান বিশ^াস।

 

বর্তমান খাদ্য গুদাম ইনচার্জ মতিয়ার রহমান জানান, মেদেহী হাসান ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ৫৩১ মে:টন সংগ্রহ করেন। আর ওই চাল অফিসিয়ালি কেনা দেখানো হয়েছে মণিরামপুরের ব্যাপারী অটো রাইস মিলের নামে ৫২১ মে:টন এবং ভাইভাই রাইস মিলের নামে ১০ মে:টন। যার অধিকাংশই নিম্নমানের। মতিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি তদন্ত টিমের নজরে আসলে খারাপ চালগুলো সংশ্লিষ্ট মিলারের নিকট থেকে বদল করে ভাল চাল সংগ্রহ করা হয়। তবে ৫২১ মে:টন কেনা দেখানো মেসার্স ব্যাপারী অটো রাইস মিলের মালিক আবদুস সালাম জানান, তিনি মাত্র ২১-থেকে ২২ মে:টন লাল চাল বদল করেন। বাকী পঁচা চাল সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেননা। বর্তমান খাদ্য গুদাম ইনচার্জ মতিয়ার রহমান বিশ্¦াস জানান, তিনি মণিরামপুরে যোগদান করে কোন ধান সংগ্রহ করতে না পারলেও ২ ফেব্রæয়ারি পর্যন্ত ৫১ মে:টন চাল সংগ্রহ করেন। তবে স্থানীয় কৃষক এবং মিলাররা মেহেদী হাসানের এ দূর্নীতির খবর জানতে পেরে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মেহেদী হাসানের দূর্নীতি প্রমানিত হলেও তার বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক (বিভাগীয়) ব্যবস্থা গ্রহন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মতিয়ার রহমান,আশরাফ হোসেনসহ অনেক মিলার।

 

অবশ্য উপজেচলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইন্দ্রজিত কুমার সাহা জানান, ইতিমধ্যে মেহেদী হাসানকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে গোপালগঞ্জে। এ ব্যাপারে জানতে মেহেদী হাসানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2017 zahidit.Com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT