1. admin@theonlinenewsbangladesh.com : admin :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:০৯ অপরাহ্ন
সাইট উন্নয়নের কাজ চলছে

প্রতিবন্ধী মা-মেয়ের আশ্রয়স্থল যাত্রী-ছাউনি, ভিক্ষায় জোটে খাবার

নওগাঁ প্রতিনিধি
  • Update Time : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৯৫৮ Time View
প্রতিবন্ধী মা-মেয়ের আশ্রয়স্থল
একসময় পরিবার ছিল, ছিল স্বামী সংসার দুটোই। সোনার সংসার ভালোই চলছিল। স্বামী ও এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল ৪৫ বছরের সুলতানা ইয়াসমিন দম্পতির। ৫-৬ বছর আগে হঠাৎ অজানা এক রোগে সুলতানা ইয়াসমিন শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়েন। ছাড়তে হয় স্বামীর সুখের সংসার।
সুলতানা ইয়াসমিন বিকলাঙ্গ হওয়ায় সৎমা তাদের বাড়িতে জায়গা দেয়নি। এরপর থেকেই নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। বাধ্য হয়ে ১৬ বছরের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে তানজিলা খাতুনকে নিয়ে যাত্রী ছাউনিতে থাকছেন। যাত্রী ছাউনিতে গড়েছেন জীবন-সংসার। এখন মা ও মেয়ে রাস্তাঘাটে, হাটবাজারে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, টাকা-পয়সা তুলে পেটের ক্ষুদা মিটাচ্ছে।
সুলতানা ইয়াসমিন নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের বালাহৈর গ্রামের তাইজুল ইসলামের স্ত্রী। এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল উপজেলার সোনাইচন্ডী গ্রামের শুকুর আলীর মেয়ে।
সরোজমিনে নিয়ামতপুর সদর বাস টার্মিনালের যাত্রী ছাউনিতে গিয়ে প্রতিবন্ধী মা ও মেয়ের দেখা মেলে। যাত্রী ছাউনিতে শুয়ে রয়েছেন সুলতানা ইয়াসমিন। তার পাশে বসে রয়েছেন বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী মেয়ে তানজিলা খাতুন। যাত্রীছাউনিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে জামাকাপড়। সেখানেই এখন তাদের বসতঘর। অসহ্য ব্যাথায় কাতরাচ্ছেন মা। নেই ওষুধ কেনার টাকা। চাল না থাকায় খাবার হয়নি সকালে। ১৬ বছর বয়সী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী মেয়ে তানজিলা খাতুন বেরিয়ে যাবেন ভিক্ষা করতে। দুপুরে ফিরলে তবেই খাওয়া হবে। সুলতানা ইয়াসমিন জানান  স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে আমারও একটা সুখের সংসার ছিল। তিন বছর আগে হঠাৎ শারীরিকভাবে বিকলাঙ্গ হয়ে পড়লে স্বামী তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন। মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়িতে উঠতে দেয়নি সৎমা। কিছু ব্যক্তির সহযোগিতায় নিয়ামতপুর উপজেলা হাসপাতাল চত্বরে ছিলাম। এরপর সেখানেও থাকার জায়গা না পেয়ে মাস তিনেক ধরে মেয়েকে নিয়ে যাত্রী ছাউনিতে থাকছি।
তিনি জানান  মেয়েটা সারাদিন বিভিন্ন জনের কাছে গিয়ে হাত পাতে। যেটুকু চাল টাকাপয়সা পায় সেটুকু নিয়ে এক বেলা দুমুঠো ভাত মুখে উঠে। আমার মেয়েটাও বড় হচ্ছে। মেয়েটার জন্য একটা থাকার ঘরের প্রয়োজন। চিকিৎসা করাতে না পারায় দিন দিন পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে। বুদ্ধি-প্রতিবন্ধী মেয়ে তানজিলা খাতুন জানান  আমাদের একটা থাকার ঘর নেই। মাকে নিয়ে খুব কষ্টে রয়েছি। সমাজের কোনো হৃদয়বান ব্যক্তি যদি একটি ঘর দিতেন তাহলে মা-মেয়ের কষ্ট লাঘব হতো। এভাবে থাকতে আর ভালো লাগে না। এক পথচারী জানান এদের দেখে অনেক কষ্ট হয়। বিভিন্ন সময় টাকা দিয়ে সহায়তা করেছি। সমাজের বিত্তবান ও উপজেলা প্রশাসনের ব্যক্তিরা তাদের সহযোগিতায় হাত বাড়িয়ে দিলে তাদের কষ্ট লাঘব হতে পারে। তাদের থাকার ঘরের জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন অনেকে।
প্রতিবন্ধী সুলতানা ইয়াসমিনের চিকিৎসা বা সংসার চালানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রতিবেশীসহ অনেকে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমতিয়াজ মোরশেদ জানান তাদের বিষয়টি নিয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। সরকারি উদ্যোগে ঘরের বরাদ্দ পাওয়া গেলে তাদের অবশ্যই দেওয়া হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2017 zahidit.Com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT