২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ| ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
শিরোনামঃ
আজ ঝিনাইদহ হানাদার মুক্ত দিবস। আজ ৬ই ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ পাক-হানাদার মুক্ত দিবস,৪৮জন শহীদের গণকবরে জেলা প্রশাসনের শ্রদ্ধাঞ্জলী প্রদান চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহানন্দা ব্যাটালিয়ন ৫৩ বিজিবির অভিযানে মোটরসাইকেল ও মোবাইলসহ আটক ২ সুনামগঞ্জ-৪ আসনে ধানের শীষের প্রার্থী এড. নুরুল ইসলামের মনোনয়ন বঞ্চিত দেওয়ান জয়নুল জাকেরীনের বাসায় গিয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ চাঁপাইনবাবগঞ্জে নজেকশিস এর নবনির্বাচিত সভাপতি তরিকুল ইসলাম সিদ্দিকী ও সাধারণ সম্পাদক বাবুল আকতার ভারতীয় হাইকমিশনের অনুরোধের অন্তঃসত্ত্বা সোনালীকে বিএসএফের নিকট হস্তান্তর করল বিজিবি কোটচাঁদপুরে শিক্ষার মানোন্নয়নে নতুন মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি হরিণাকুণ্ডুতে ভোর হলো ঝিনাইদহের আয়োজনে সালেহা বেগম মহিলা ডিগ্রী কলেজে নবান্ন উৎসব ২০২৫ উদযাপিত। বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশ্বম্ভরপুরের ভাদেরটেক বাজারে আলোচনা সভা দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজয় মাসে যুবক ও তরুন প্রজন্মকে নিয়ে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা

চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, অক্টোবর ১২, ২০২৫,

আব্দুস সালাম,নীলফামারী প্রতিনিধি:
নীলফামারী সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজে দীর্ঘদিন ধরে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ছাত্র-অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক এবিএম লুৎফুর কাদের এবং সহকারী শিক্ষক মো. এনামুল হকের কারণে বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে না।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের শিক্ষার মান ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে এবং তাদের ভবিষ্যৎ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছে। উল্লেখযোগ্য হলো, প্রধান শিক্ষক এবিএম লুৎফুর কাদের রামগঞ্জ হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় বর্তমানে পালাতক রয়েছেন। মাঝে মাঝে এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে চলে যান।

২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের পর বিষয়টি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। বিদ্যালয়ের মোট ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২৭ জন পাশ করেছেন। পাশ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে অধিকাংশই ওসমান গনী হাইটেক কিন্ডারগার্টেন স্কুল থেকে ধার করা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে গণিতসহ একাধিক বিষয়ে অকৃতকার্যতার হার উল্লেখযোগ্য।
স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মোট ১৫টি গুরুতর অভিযোগ উত্থাপন করেছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অভিযোগগুলো হলো— অভিজ্ঞতা ছাড়া সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি এবং পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক পদে এমপিওভুক্তি, জাল কাগজপত্র ব্যবহার করে শিক্ষক নিয়োগ ও এমপিওভুক্তি, আত্মীয়স্বজনকে চাকরি দিয়ে এমপিওভুক্তি, নিয়োগ বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, পুরনো ভবনের ইট, টিন ও ফ্যান বিক্রি এবং সরকারি প্রকল্পের বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ, কলেজ শাখায় নিয়মিত ক্লাস না চালিয়ে শুধু ভর্তি গ্রহণ, চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নেওয়া এবং ফেরত না দেওয়া, প্রতিষ্ঠানের পুকুর ভরাট ও ফলজ ও বনজ গাছ নিধন, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালনকালে ঘুষ গ্রহণ ও পক্ষপাতিত্ব, পকেট কমিটি গঠন করে সুবিধা গ্রহণ।

অভিভাবক মো: মনিরুজ্জামান জানিয়েছেন, “আমরা চাই আমাদের সন্তানরা সঠিকভাবে পড়াশোনা করতে পারে। কিন্তু এখানে শিক্ষকরা শিক্ষাকে ব্যবসায় পরিণত করেছেন। এটি মারাত্মক ক্ষতির কারণ।”

এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করেছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত তদন্ত করে প্রধান শিক্ষক এবিএম লুৎফুর কাদের এবং সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তারা মনে করছেন, বিদ্যালয়ের স্বাভাবিক পাঠদান এবং শিক্ষার মান পুনরুদ্ধার ছাড়া ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ক্ষতি অবশ্যম্ভাবী।

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা প্রশাসন, জেলা শিক্ষা অফিসার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। এ বিষয়ে অভিভাবক মো মনিরুজ্জামান উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অভিযোগ দায়ের করার পরেও কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।

স্থানীয় এলাকাবাসী গলি চন্দ্র রায় বলেন, ২০১৪ সালে চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের পিয়ন পদে নিয়োগ দেওয়ার নাম করে প্রধান শিক্ষক লুৎফুর কাদের সম্রাট ১ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। ১৫ শতক জমি বিক্রি করে টাকা দিয়েছিলাম যার বর্তমান বাজার মূল্য ৮ লক্ষ টাকা। তিনি টাকা চাইতে গেলে শুধু তারিখের পর তারিখ দেয়। তিনি ২০১৪ সালে রামনগর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমি ছাড়াও আরো ৩ জনের কাছে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিলো। কাউকে চাকরির দেয় নি।

অভিভাবক মো: আব্দুল্লাহ শাহ বলেন, মেয়ে চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। ২০২৫ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে। ২০২৫ সালে ৫৭ জন পরিক্ষা দিয়েছেন তার মধ্যে ২৭ জন এর মধ্যে ৬ জন পাশ করেছে অন্য ছাত্র গুলো ওসমান গনী হাইটেক কিন্ডারগার্টেনের ছাত্র। একটি বিদ্যালয়ে যদি মাত্র ৬ জন পাশ করে তাহলে কেমন শিক্ষা প্রদান করে।

সহকারী প্রধান শিক্ষক নাহিদা ইইয়াসমিনের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সমস্যা তো থাকতে পারে। আজ দুপুর ১ টার সময় প্রধান শিক্ষকের সাখে ফোনে কথা হয়েছে। রামগঞ্জ হত্যা মামলার আসামী হওয়ায় মাঝে মাধ্য সকালে আসেন।

প্রধান শিক্ষক এবিএম লুৎফুর কাদেরের সাথে দুপুর ২টার সময় মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান এ বিষয়ে এখন আমার সাথে কথা বলা যাবে না। আমি এখন সুইছি।

এর আগে চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজে গেলে তাকে পাওয়া যাইনি। তখন মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরে ফোন রিসিভ করলেও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।

চড়চড়াবাড়ী স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান পরিস্থিতি শুধু একটি বিদ্যালয়ের সংকট নয়, এটি পুরো এলাকার শিক্ষাব্যবস্থার জন্য হুমকি। অভিভাবক ও স্থানীয়রা বলছেন, “যদি অভিযোগের ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, শিক্ষার্থীরা মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং প্রতিষ্ঠানটি অনিয়ম-দুর্নীতির অভয়ারণ্যে পরিণত হবে।”

Please Share This Post in Your Social Media

আরো খবর দেখুন