1. admin@theonlinenewsbangladesh.com : admin :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
সাইট উন্নয়নের কাজ চলছে

অবশেষে উন্মুক্ত হলো আলোচিত পাইকগাছার নাছিরপুরে খাস খাল

ইমদাদুল হক, পাইকগাছা প্রতিনিধি
  • Update Time : বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫
  • ১৮৬ Time View

অবশেষে উন্মুক্ত হলো খুলনার পাইকগাছা উপজেলার বহুল আলোচিত নাছিরপুর খাস খাল। দীর্ঘদিন ধরে কখনো ইজারা নিয়ে আবার কখনো ইজারাবিহীন অবৈধ দখলে রেখে খণ্ড খণ্ড করে নেটপাটা দিয়ে লবণ পানির চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করছিলেন দখলদাররা।

 

 

স্থানীয়রা জানান, এসব জলমহাল থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষ যেমন ফসলের জন্য পানি দিতে পারে না, তেমনি প্রয়োজনীয় কাজেও এ পানি ব্যবহার করতে পারতো না। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসী জলমহাল উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল। সম্প্রতি সে লক্ষ্যে খুলনা জেলার ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করে জেলা প্রশাসন।

 

 

এর আগে, পাইকগাছা উপজেলার নাছিরপুরে খাল দখলকে কেন্দ্র করে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। অস্ত্রশস্ত্রসহ দখল-পাল্টা দখলের মহড়া চালায় এলাকার প্রভাবশালী মহল। সেখানে মৎস্যজীবীদের মারধর করে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, নাছিরপুর খালটি ইজারার জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টেন্ডার দাখিল করা হলেও কোনো পক্ষকে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, গত এপ্রিলে টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। খালটি দখলদারিত্বের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী শাহাদাত হোসেন ডাবলু ও তার সহযোগীদের নামে অভিযোগ করেন সেখানকার মৎস্যজীবীরা। কয়েক দফা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান তারা।

 

স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, দখল-পাল্টা দখলকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সেখানে সাধারণ মৎস্যজীবীদের মারধর করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও মেলেনি সমাধান।

 

এ প্রসঙ্গে স্থানীয় কপিলমুনি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউএলএও কৃষ্ণ চন্দ্র দাশ জানান, ৬৮ দশমিক ১০ একরের নাছিরপুর খাল উন্মুক্ত রাখার বিষয়টি বাস্তবায়নে বুধবার জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ টিম নাছিরপুর এলাকা পরিদর্শন করেছে।

 

স্থানীয়রা জানান, খালের বিভিন্ন স্থানে খণ্ড খণ্ড করে নেটপাটা দিয়ে মাছ চাষ করায় চলতি বর্ষা মৌসুমে বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অন্তত ২০টি গ্রামের অর্ধলাখ মানুষের কৃত্রিম জলাবদ্ধতার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া আবাদ মৌসুমে খালের পানি বৃদ্ধি পেয়ে লবণ পানি ঢুকে পড়ায় ধান চাষ চরমভাবে বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে।

 

বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. ইফতেখারুল ইসলাম শামীম, উপজেলা সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, পুলিশ সদস্যদের নিয়ে নাছিরপর খাল অবৈধ দখল মুক্তর সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। খালের মধ্যে অবৈধ নেটপাটা অপসারণ কাজ শুরু করেন। খালের সাত স্থানে দেওয়া নেটপাটা পর্যায়ক্রমে উন্মুক্ত করে পানিপ্রবাহ নিশ্চিত করা হবে।

 

নাছিরপুর খাল উন্মুক্ত ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত শত শত মানুষ উল্লাস প্রকাশ করেন। জাল নিয়ে খালে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। ইতোপূর্বে বহুবার এ খাল দখল পাল্টা দখল হয়েছে। এ বিষয়ে বহু মামলা-হামলার ঘটনা ঘটেছে।

 

এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু জেলা দশটি খাল উন্মুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করেছি। এর মধ্যে নাছিরপুর খাল অন্যতম। পর্যায়ক্রমে এ খালটি উন্মুক্ত করা হবে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2017 zahidit.Com
ডিজাইন ও কারিগরি সহযোগিতায়: BDiT